|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ওড়িশার ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা আরও একবার কেঁপে উঠল ভারত। গত ১৫ বছরে ছোট-বড় অনেক দুর্ঘটনাই ঘটেছে, কিন্তু করমন্ডল এক্সপ্রেসের মতো ভয়ংকর ছিল না সেগুলো। ভারতের সবচেয়ে বড় ট্রেন দুর্ঘটনা এটি। নিচে দেশটির গত ১৫ বছরের ট্রেন দুর্ঘটনাগুলো তুলে ধরা হলো:
জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস (২০১০) : ২০১০ সালের ২৮ মে, দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের খেমাশুলি ও সারধিয়া স্টেশনের মধ্যে কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হওয়ায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। পরে মালবাহী ট্রেন বগিগুলোর ভেতর দিয়ে চলে যায়। কমপক্ষে ১৪৮ জন যাত্রী মারা যান। ঘটনাটি ঘটেছিল মধ্যরাতে।
উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস ও বনঞ্চল এক্সপ্রেস (২০১০): ২০১০ সালে ভারত আরও একটি ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিল। ১৯ জুলাই উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস ও বনঞ্চল এক্সপ্রেস সাইথিয়ায় একে অপরের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। ফলে ৬৩ জন নিহত ও ১৬৫ জনেরও বেশি আহত হন।
ছাপড়া-মাথুরা এক্সপ্রেস (২০১১): ছাপড়া-মাথুরা এক্সপ্রেসের একটি বাসের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় ২০১১ সালের ৭ জুলাই। সংঘর্ষটি ঘটে উত্তরপ্রদেশের ইটা জেলার কাছে। ঘটনাটি ঘটেছিল দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে। দুর্ঘটনায় ৬৯ জন মারা যান ও অনেকে গুরুতর আহত হন।
হুবলি-বেঙ্গালোর হাম্পি এক্সপ্রেস (২০১২): হুবলি-বেঙ্গালোর হাম্পি এক্সপ্রেসের সংঘর্ষ হয় একটি মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে। সংঘর্ষটি ঘটে ২০১২ সালের ২৩ মে, অন্ধপ্রদেশে। দুর্ঘটনায় আহত হন ৪৩ জন, মারা যান ২৫ জন যাত্রী। আরও কয়েকজন যাত্রী আগুনে পুড়ে যান বলে জানা যায়।
তামিলনাড়– এক্সপ্রেস (২০১২): নোলোরের কাছে দিলি-চেন্নাই এক্সপ্রেসের একটি কোচে আগুন লাগে ২০১২ সালের ৩০ জুলাই। ফলে ৩০ জনেরও বেশি লোক মারা যান।
গোরখধাম এক্সপ্রেস (২০১৪): ২০১৪ সালের ২৪ মে, গোরখধাম এক্সপ্রেস একটি থামানো মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। ঘটনাটি ঘটে উত্তর প্রদেশের সন্ত কবির নগর এলাকায়। সংঘর্ষে ২৫ জন নিহত ও ৫০ জনেরও বেশি আহত হন।
জনতা এক্সপ্রেস (২০১৫): ২০১৫ সালের ২৫ মার্চ জনতা এক্সপ্রেস একটি ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। দেরাদুন থেকে বারাণবাসে যওয়ার পথে দুর্ঘটনাটি ঘটে। ফলে ৩০ জনেরও বেশি লোক নিহত ও ১৫০ জন আহত হন।
পাটনা-ইন্দোর এক্সপ্রেস (২০১৬): পাটনা-ইন্দোর এক্সপ্রেস ২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর কানপুরের পুখরায়নের কাছে লাইনচ্যুত হয়। যার ফলে কমপক্ষে ১৫০ জন মারা যান ও ১৫০ জনেরও বেশি আহত হন।
কলিঙ্গ-উৎকল এক্সপ্রেস (২০১৭): কলিঙ্গ-উৎকল এক্সপ্রেস উত্তরপ্রদেশের মুজফফর নগরের খাতৌলির কাছে একটি দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়। দুর্ঘটনাটি ঘটে ২০১৭ সালের ১৯ আগস্ট। এতে লাইনচ্যুত হয় ১৪টি বগি। এ দুর্ঘটনায় ২১ জন নিহত ও ৯৭ জন আহত হন।
কাইফিয়াত এক্সপ্রেস (২০১৭): ২০১৭ সালে আরও একটি দুর্ঘটনা ঘটে উত্তরপ্রদেশের আইডিয়ার কাছে। যেখানে কাইফিয়াত এক্সপ্রেসের নয়টি বগি লাইনচ্যুত হয়। যদিও এ দুর্ঘটনায় কেউ মারা যাননি, কিন্তু আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ৭০ জনে।
বিকানের গুয়াহাটি এক্সপ্রেস (২০২২): ২০২২ সালের ১৩ জানুয়ারি, বিকানের গুয়াহাটি এক্সপ্রেসের ১২টি বগি লাইনচ্যুত হয়। এটি ঘটে পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদারে। এ দুর্ঘটনায় ৯ জন নিহত ও ৩৬ জন আহত হন।
রেলওয়ে গত কয়েক বছরে যাত্রীদের দিকে নজর দিচ্ছে। রেলপথগুলো উন্নত করারও চেষ্টা চলছে। ট্রেনগুলোকে সংঘর্ষের হাত থেকে বাঁচাতে ট্রেনে ‘কচাভ’ নামের একটি ডিভাইসও স্থাপন করা করেছে বলে জানা গেছে। একাধিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও শুক্রবার ঘটে যাওয়া ঘটনার এখন অনেকে প্রশ্ন তোলেন।
